বাংলাদেশে ‘নিরক্ষর মুক্ত প্রথম গ্রাম’ তৈরীর এক মহানায়ক
এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভের পর ঠাকুরগাঁওয়ের তরুণ-যুবারা ঝাঁপিয়ে পড়ে আরেকটি যুদ্ধে। সেটি সাক্ষরতার যুদ্ধ, নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম গড়ে তোলার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কচুবাড়ি-কৃষ্টপুর গ্রাম দেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সে অর্জনের চার দশক পরও প্রথম নিরক্ষরমুক্ত গ্রামের আলোতে আলোকিত হতে পারেনি জেলার মানুষ।
যেভাবে সাফল্য আসে: যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার বিকল্প নেই। তাই ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে—সরকারের এমন উদ্যোগের পর কচুবাড়ি কৃষ্টপুর গ্রামকে নিরক্ষরমুক্ত করে তোলার আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন মোকছেদ আলী। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন আবদুল খালেক, রিয়াজুল ইসলাম, রমেজা খাতুন, আফাজউদ্দিন, আবদুল জব্বার, হাসিবুল হকসহ ২৪ জন নর-নারী।
আন্দোলনের শুরুতেই তাঁরা গ্রামে মিছিল করে জানান দেন ‘টিপসই ছি ছি, শিখ নাম লিখিতে’। পরে ফসলের খেতে পুরুষদের ও চুলার পাশে বসেই নারীদের নাম লেখা শেখানোর পাশাপাশি শেখানো হয় অ, আ...ক, খ।
গ্রামের ছেলেমেয়েরা শহরের বিভিন্ন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বলে যান, তাঁদের গ্রামের কেউ টিপসই দিতে চাইলে, তাঁর কাছ থেকে যেন ‘নাকসই’ (নাকখত) নেওয়া হয়। পরে ‘নাকসই’-এর অপমান থেকে বাঁচার জন্য বয়স্করা গ্রামের শিক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে বললেন, ‘বাবারে নাম লেখা শিখায়ে দে।’ অবশেষে তিন মাসের পরিশ্রমে গ্রামটি নিরক্ষরমুক্ত হয়ে ওঠে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস